ভর্তি পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীরা সাধারণত কি কি ভুল করে থাকে?
ভর্তি পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীরা সাধারণত কি কি ভুল করে থাকে, কি কি কারণে অনেকে অনেক পরিশ্রম করেও পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছে না, এমনকি অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়েই চান্স পাচ্ছে না। সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে হয়তো আপনি আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় হারাতেও পারেন। কি কি ভুল করে থাকে শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার আগে-
লক্ষ নির্ধারণ করতে না পারা: প্রত্যেক শিক্ষার্থীর উচিত একটি লক্ষ নির্ধারণ করা। কিন্তু অনেকে একই সঙ্গে অনেকগুলো প্রিপারেশন নেয়। এটিই তাদের চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। চান্স না পাওয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এটা ঘটে থাকে। সেজন্য অবশ্যই উচিত একটি লক্ষ নির্ধারণ করা। বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্জিনিয়ারিং, মেডিকেল ইত্যাদি এগুলোর মধ্যে একটা লক্ষ নির্ধারণ করা, আর একটিরই ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া। তবে কিছু শিক্ষার্থী থাকে যারা আসলেই অনেক ভালো, তারা যেখানে পরীক্ষা দেয় সেখানেই ভালো পজিশনে থাকে।
আত্মবিশ্বাস বেশি বা আত্মবিশ্বাসের অভাব: ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগে অনেকে অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে, তারা বুঝতেই পারে না যে ভর্তি পরীক্ষায় কি পরিমাণ প্রতিযোগীতা হয়ে থাকে। আবার অনেকে এতো প্রতিযোগীতা দেখে আত্মবিশ্বাস হারায় ফেলে, তারা চান্স পাবে না বলে আগেই হতাশ হয়ে যায়।
পরিশ্রমী না হওয়া ও গুঁছিয়ে না পড়া: পরিশ্রম না করা চান্স না পাওয়ার আরেক কারণ। এ সময় অনেক অনেক পরিশ্রম করতে হয়। দিনের মধ্যে যতটা সময় সম্ভব, ততটা পড়াশুনায় সময় দেওয়া। আর শুধু পড়াশুনা করলেই নয়, পড়াটা গুঁছিয়ে পড়তে হয়। কোনটা পড়া দরকার আর কোনটা দরকার নাই সেইদিকে খেঁয়াল রাখা। সেক্ষেত্রে বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন দেখলে ভালো ধারণা পাওয়া যায়।
সময় নষ্ট করা: ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষার আগের সময়টুকু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় কোনোভাবেই সময়টাকে পড়াশুনা আর প্রয়োজনীয় কাজের বাইরে না দেওয়া।
অতিরিক্ত কোচিং ও প্রাইভেটে সময় ব্যয়: ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে একটা বিষয় দেখা যায় অনেকে অতিমাত্রায় কোচিং নির্ভর। আবার অনেকে কোচিং এর পাশাপাশি প্রাইভেটও পড়ে। তারা দিনের বেশিরভাগ সময় কোচিং ও প্রাইভেটে এ কাটিয়ে দেয়। যার ফলশ্রুতিতে তারা বাড়িতে নিজের পড়াতে সময় দিতে পারে না। এ সময় তারা অনেক পিছিয়ে যায়। কিভাবে কম সময়ে কোচিং শেষ করে আবার পড়াশুনায় মনোনিবেশ করা যায়, সে দিকে তাদের অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। আর এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, কোচিং, প্রাইভেটে তাদের পড়া করায় দিবে না। সব পড়াশুনা নিজেকেই বাসায় করতে হবে।
ভুল লক্ষ নিয়ে পথ চলা: ভর্তি পরীক্ষার্থীদের অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকদের চাপে পড়ে নিজের ভালো লাগাকে দূরে ঠেলে দেয়। তাদের যে বিষয় ভালো লাগে সে দিকে তারা যেতে পারে না। যার ফলশ্রুতিতে তারা চান্স পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো করতে পারে না। ফলে নিজে এক অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হয়। এজন্য নিজের ভালো লাগা বিষয়টি লক্ষ হিসেবে নির্ধারণ করা।
মূল বইকে বেশি প্রাধান্য না দিয়ে কোচিং প্রাইভেটের বইগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া: ভর্তি পরীক্ষার্থীদের এ বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মূল বইকে সব সময় আগে প্রাধান্য দিতে হবে এবং মূল বই বেশি পড়তে হবে। তারপর কনসেপ্ট বুক, প্রশ্ন ব্যাংক এগুলো টাইপের বইগুলো প্র্যাকটিস করতে হবে। তবে এগুলো আগেই পড়া যাবে না।
অন্যকে অনুসরণ করা: অনেকে আছে তার সহপাঠী বা পরিচিতরা এডমিশন নিয়ে যা করছে সেও তা অন্ধের মতে ফলো করে। যার ফলে সে নানান সময়ে নানা ভুল করে ফেলছে। এজন্য নিজের ভালোর দিকে লক্ষ্য রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্যকে অন্ধের মত ফলো করা যাবে না।
পড়া শুরু করার অনিয়মতা ও পড়া জমিয়ে রাখা: পড়া আজ হলো না, কাল থেকে অতিমাত্রায় পড়া শুরু করবো এমনটা করা। ফলে পরেরদিনও একই বিষয়ের পুনরাবৃত্তি হয়। ফলে পড়া জমিয়ে যায় এবং এডমিশন অনেক পিছিয়ে যায়। এইসব অভ্যাস ত্যাগ করা।
#admission #এডমিশন #ভর্তি_পরীক্ষা